সহজ কথায় বলতে গেলে লিনাক্স একটি অপারেটিং সিস্টেম। আপনারা উইন্ডোজ যেভাবে আপনার কম্পিউটর বা ল্যাপটপে ব্যবহার করেন ঠিক তেমনিভাবে লিনাক্সও ডেস্কপট এবং ল্যাপটপে ব্যবহার করা যায়। তবে হ্যা, লিনাক্স এর বেশ কিছু বৈশিষ্ট আছে যা এটাকে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম থেকে আলাদা করে রেখেছে। নিচে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে লিনাক্স এর কিছু মিল দিলাম।
* অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম এর মত লিনাক্সেও ডেস্কটপ এবং সার্ভার ভার্সন আছে।
* এখানেও মুভি দেখা যায়, গান শোনা যায়, ছবি বা ভিডিও এডিট করা যায়, ওয়ার্ড এক্সেল বা পাওয়ার পয়েণ্ট এর কাজ করা যায়।
* এখানেও ফাইল শেয়ারিং, বাংলা টাইপিং, বাংলা প্রিন্টিং, স্ক্যানিং, নরমাল ফাইলকে পিডিএফ সহ অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ করা যায়।
* এখানেও মজিলা ফয়ারফক্স, অপেরা বা ক্রোম ব্রাউজার দিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, মজিলা থান্ডারবার্ড দিয়ে ইমেইল, ষ্কাইপ, ড্রপবক্স, গুগল ড্রাইভ, টিম ভিউয়ার ইত্যাদি বেশ মজা করেই ব্যবহার করা যায়।
সর্বোপরি উইন্ডোজ এর প্রায় সমস্ত কাজই এখানে করা যায়। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে, যদি সব একই হয় তাহলে কেন লিনাক্স ব্যবহার করব? আসুন নিচে কিছু উত্তর দেখে নেই:
* যদিও উইন্ডোজ আপনি পাচ্ছেন ফ্রিতে বা ৩০টাকা দামের সিডিতে, আসলে এটা একটা চুরি করা মাল। (শুনতে খারাপ শোনালেও এটাই সত্যি!)
* উইন্ডোজ এ আপনি যা ব্যবহার করেছেন সবগুলি সফ্টওয়্যারই আপনি ফ্রিতে পেলেও সবগুলোই আসলে চুরি করা মাল।
* কোন সফ্টওয়ার পেলেই আপনার খোজেন এইটার crack কোথায় পাব? ইংরেজীতে সুন্দর একটা শব্দ ‘crack’ যার আসল কাম হচ্ছে চুরি।
তাহলে আপনি আজ পযর্ন্ত যতগুলি সফ্টওয়্যার ব্যবহার করেছেন সবগুলিই আসলে চুরি করা সফ্টওয়্যার। তারমানে কি আপনি একটা মহাচোর???
অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে হচ্ছে উত্তরটা হবে ‘হ্যা’। আপনার কাছে যুক্তি থাকতে পারে ‘আমি তো আর চুরি করিনি, আমি ৩০ টাকা দিয়ে কিনেছি’। উত্তর আসতে পারে চুরি করা মাল টাকা দিয়ে কিনলে কি জায়েজ হয়ে যায়? আপনার সন্তানকে যদি কেউ চুরি করে বিক্রি করে দেয় তাহলে কি সে অন্য লোকের সন্তান হয়ে যায়।?
যাই হোক এইবার আসুন লিনাক্স এর কিছু সুবিধা নিয়ে আলোচনা করি।
* প্রথমত এই পুরোপুরি ফ্রি এবং আসলেই ফ্রি। আপনি আপনার পছন্দমত ভার্সন ডাউনলোড করে ইনষ্টল করে নিন, ব্যাস হয়ে গেল আপনার সম্পত্তি।
* এর অধিকাংশ সফ্টওয়্যারই ফ্রি তাই কোন কিছু চুরি করতে হয় না বা চুরির দায় কাধে নিতে হয় না।
* আপনাকে কোন এ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে না কারন লিনাক্স এ ভাইরাস বা ট্রোজেন এ্যাটাক করতে পারে না।
* অপারেটিং সিস্টেম ক্র্যাশ করলে আপনার প্রয়োজনীয় ফাইল ব্যকআপ করা নিয়ে বিরাট টেনশন করতে হবে না কারন এতে হোম পার্টিশন আলাদা করা যায়। এবার আপনার অপারেটিং সিস্টেম হাজারবার পরিবর্তন করুন, আপনার ফাইল এর কিছু হবে না।
* উইন্ডোজ এর জনপ্রিয় অধিকাংশ সফ্টওয়ার লিনাক্স এ ফ্রি পাওয়া যায় যেমন: পুরো অফিস প্যাকেজ, পিডিএফ, ফাইলজিলা, সমস্ত ব্রাউজার, থান্ডারবার্ড, VLC প্লেয়ার, ফটোশপের মতই ‘ক্রিতা’, অটোক্যাডের মত ড্রাফ্টসাইট, ওপেনশট ইত্যাদি আরও হাজার হাজার প্রোগ্রাম যা আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করেন।
এই রকম আরও প্রচুর সুবিধা পাবেন লিনাক্স এ। নিজে ব্যবহার করা শুরু করুন দেখবেন এক সময় একে ছাড়তে পারবেন না।